মানিকগঞ্জের ঘিওরে বিএনপি নেতা লাভলু আহমেদকে (৩৭) কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদে উপজেলা সদরে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) হরতাল ডেকেছিল ঘিওর বাজারের ব্যবসায়ী ও নিহতদের কুস্তা।গ্রামবাসী উপজেলা বিএনপি নেতাদের অধিকাংশই হরতাল সমর্থন করেন।এদিকে নিহতের মরদেহ মানিকগঞ্জ থেকে উপজেলা মোড়ে ঘিওরে আনা হয়েছে।
আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়।বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা, হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও হরতাল গোটা উপজেলাসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা।
এর আগে গতকাল সোমবার ঘিওর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ছাত্রদল সাবেক সাধারণ সম্পাদক লাভলু আহমেদকে (৩৭) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এসময় মারাত্মক আহত হয়েছেন আরও ৬ জন।
জানা গেছে, উপজেলার কুস্তা ও উপজেলার মোড় বটতলা দুই গ্রামবাসীর মধ্যে আঞ্চলিক আধিপত্য ও অতীত শত্রুতার কারণেএই হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২০০৩ সালে ঘিওর উপজেলা ছাত্রদলের নেতা লাভলু আহমেদ খুন হন।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে সরজমিনে দেখা যায়, ঘিওর উপজেলা সদরের সব দোকানপাট।বন্ধ উপজেলা সদর থেকে বিভিন্ন রুটে যান চলাচল খুবই কম ছিল।পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।ঘিওর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান খান কুদরত ও উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী (দুই কুস্তাগ্রামের বাসিন্দারা) ধর্মঘটের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দিবালোকেকু পিয়ে হত্যার একদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো আসামি নেই পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের তরফে অভিযুক্ত আসামি গ্রেফতারের দাবিতে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে সকালে উপজেলার বাসস্ট্যান্ড, বাজার, পাঁচরাস্তা মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে আগুন লাগিয়ে বিক্ষোভ করেন বাসিন্দারা। উপজেলা সদরের কয়েকটি স্পটে অতিরিক্ত পুলিশকে সতর্কভাবে টহল দিতে দেখা গেছে।
এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে বিকেল সাড়ে চারটায় কুষ্ট সামাজিক কবরস্থানে নিহতের লাশ দাফন করা হয়েছে। দুপুর আড়াইটার দিকে নিহত লাভলুর লাশ উদ্ধার করা হয় কুস্তা গ্রাম ও এলাকাবাসী উপজেলা পরিষদের সামনে বিক্ষোভ করে ওই সময় উপজেলা সদরের বটতলা এলাকায় হানাদাররা বসবাস করত একটি বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করা হয়েছে।
হামলার শিকার: মোঃ সোলায়মানের বাড়ি, ইউপি সদস্য সেলিনা আক্তারের বাড়ি,আরজু বেপারীর বাড়ি, মোঃ রায়হানের বাড়ি, মুরাদের ডেকোরেটরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে। আরজু উপজেলার বটতলা মোড় এলাকার বাসিন্দা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট বেপারীর বাড়িতে এসে আগুন নেভায়
নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
ঘিওর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান মোঃ সিদ্দিক আলী জানান, খবর পেয়ে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আরজু বেপারীর বাড়িতে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।আগুনে আসবাবপত্র, এসিসহ অন্তত ৫ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।হামলার শিকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট সোলায়মান মিয়া বলেন,তারা আমার ঘর ভাংচুর করে, দরজা ভেঙ্গে, আসবাবপত্র ভাংচুর করে।মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দিন। এ সময় দুর্বৃত্তরা আমার বাড়ি থেকে নগদ টাকা ও ৪-৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করা হয়। আমি সদস্যদের সাথে অন্য ঘরে পালিয়ে যাচ্ছিলাম। এই তান্ডপে অন্তত শতাধিক মানুষ তারা সবাই কুস্তা গ্রামের বাসিন্দা।
মিজানুর ঘিওর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুস্তা গ্রামের বাসিন্দা কুদরত আলী বলেন, ৫ আগস্টের পর উপজেলা মোড়ে কয়েকজন পরিচিত সন্ত্রাসী,যারা আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তারা এখন বিএনপির নাম ধ্বংস করছে দুষ্টুমি করছে আসলে তারা সন্ত্রাসী। প্রকাশ্যে ছাত্রদলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদককে কুপিয়ে হত্যা করেছে। তিনি আরও বলেন, ভিকটিম লাভলুর
লাশ আনার সময় উপজেলা মোড়ে দলের কোনো সদস্য হট্টগোলে লিপ্ত হলে,বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এ ব্যাপারে ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, নিহতের পরিবার এখনো মামলা করেনি। আমি তারা শুনেছি
জানাজা শেষে তিনি থানায় আসবেন। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হচ্ছে গ্রেফতার করা হবে। উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে।