বুধবার,

১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

|

৩০ মাঘ ১৪৩১

|

১২ শা'বান ১৪৪৬

বুধবার,

১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

|

৩০ মাঘ ১৪৩১

|

১২ শা'বান ১৪৪৬

ABC News

দৌলতপুরে প্লাস্টিকের বিকল্প ব্যবহার বিষয়ক সচেতনতা মুলক কর্মশাল ও বিভিন্ন হাট বাজারে প্রচারণা

মোঃ শাহ আলম, বিশেষ প্রতিনিধি:

প্রকাশিত: ০৫:১০ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২৫

আপডেট: ০৭:৩২ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২৫

দৌলতপুরে প্লাস্টিকের বিকল্প ব্যবহার বিষয়ক সচেতনতা মুলক কর্মশাল ও বিভিন্ন হাট বাজারে প্রচারণা

 

"এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই" এই স্লোগানকে সামনে রেখে  মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায়  প্লাস্টিকের বিকল্প ব্যবহার বিষয়ক সচেতনামূলক কর্মশালা ও বিভিন্ন হাট বাজারে প্রচারণা ।

 বুধবার ১৫ জানুয়ারি সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ হলরুমে প্লাস্টিক বিকল্প ব্যবহার বিষয়ক সচেতনামূলক কর্মশালা, রেলি ও বিভিন্ন হাট বাজারে প্রচারণা করা হয়েছে।

আলোচনা সভায় উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত  আহসানুল আলম এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ শাহ আলম, উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মায়নুল ইসলাম, উপজেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ  রাফিজুল হাসান, ছাত্র প্রতিনিধি ইসরাফিল ও জুবায়ের হোসেন প্রমুখ।

 

আলোচনা সভায় উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত আহসানুল আলম বলেন-  প্লাস্টিক আমাদের পরিবেশের এবং দেহের অনেক ক্ষতি করে।তাই আমাদের প্লাস্টিকের বিকল্প জিনিস যেমন পাটের তৈরি ব্যাগ, কাপড়ের ব্যাগ, কাগজের ব্যাগ সহ বিকল্প জিনিস ব্যবহার করা প্রয়োজন। আমাদের বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রায় ৮ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়, এর মধ্যে ৩৬ শতাংশ পুনঃচক্রায়ণ, ৩৯ শতাংশ ভূমি ভরাট এবং অবশিষ্ট ২৫ শতাংশ সরাসরি আমাদের পরিবেশে দূষণ হিসাবে যোগ হচ্ছে। সিঙ্গেল ইউজ বা একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিন ব্যাগ প্লাস্টিক বর্জ্যরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক। কারণ এসব প্লাস্টিকের যত্রতত্র ব্যবহার এবং ক্রটিপূর্ণ ব্যবস্থাপনার ফলে খাল, নদী ও নালার স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়, যার ফলে দেখা যায় জলাবদ্ধতা সমস্যা। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে বাংলাদেশের চারটি প্রধান বিভাগীয় শহর ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও সিলেটের ওপর বেসরকারি সংস্থা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপম্যান্ট অর্গানাইজেশন পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায়, দেশে তরুণ ও যুবকরা প্লাস্টিক দূষণের জন্য বেশি দায়ী। ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সিরা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ৬৮ শতাংশ ব্যবহার করছে। যেসব খাবারের সঙ্গে প্লাস্টিক রয়েছে, সেগুলোর সবচেয়ে বেশি ব্যবহারকারী হচ্ছে তরুণ ও যুবকরা।সহজলভ্যতা, বহুমুখী ব্যবহার, স্বল্পমূল্য, হালকা ওজন ও উচ্চস্থায়ীত্বের ফলে নানা ধরনের প্লাস্টিক সামগ্রী—যেমন প্লাস্টিক ব্যাগ, ফিল্ম, সিন্থেটিক পোশাক, কার্পেট, থালাবাসন, ঘটি-বাটি, বোতল, টায়ার, খেলনা, প্যাকেটজাত দ্রব্য, সার, যন্ত্রপাতি, যানবাহনের বডি ও যন্ত্রাংশ ইত্যাদি—পরিণত হয়েছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের এক অনিবার্য উপাদানে। নিত্যব্যবহার্য এসব প্লাস্টিক সামগ্রী, সিন্থেটিক টেক্সটাইল ও কলকারখানা থেকে নির্গত বর্জ্য সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে প্রতিনিয়ত ছড়িয়ে পড়ছে পরিবেশে। পরে তাপমাত্রা, অণুজীব এবং পরিবেশে বিভিন্ন ক্রিয়া-বিক্রিয়ার কারণে এ সব প্লাস্টিক ভেঙে পরিণত হয় বিভিন্ন আকারের প্লাস্টিকে; যা আবারও পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান ও সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ক্ষয় হয়ে পরিণত হয় ছোট ছোট প্লাস্টিক কণা, পাউডার কণা বা অতি ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণায়। বিজ্ঞানের ভাষায় এসব অতিক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণাকে বলা হয় মাইক্রোপ্লাস্টিক বা মাইক্রোপ্লাস্টিক ফাইবার। এ সব প্লাস্টিক কণা মাটিতে বা পরিবেশে টিকে থাকতে পারে ৬০  বছরেরও বেশি। আর এরই ফলাফল বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে প্লাস্টিক দূষণ। বাতাস, মাটি ও পানির ওপর প্লাস্টিকের দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব পরিবেশকে ঠেলে দিচ্ছে হুমকির মুখে, জনস্বাস্থ্যের ওপর পড়ছে বিরূপ প্রভাব। এ ছাড়াও প্লাস্টিক ও পলিথিন পোড়ানোর ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে বায়ু ও মাটি দূষণ। প্লাস্টিক কণাকে তাই এখন ক্ষতিকর দূষক হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

তাই এসো দেশ বদলাই পৃথিবী বদলাই। আমরা সকল প্রকার প্লাস্টিক ব্যাবহার থেকে বিরত থাকি।

আলোচনা সভা শেষে উপজেলা পরিষদ চত্বর একটি রেলি দৌলতপুরের বিভিন্ন বাজার প্রদক্ষিণ করে এবং দোকানীদের সাথে মতবিনিময় করেন। এবং ব্যবহারের বিষয়ে নিষেধ করা হয়।