মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সরকারি প্রমোদা সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে টানা ১৯ দিন চলমান আন্দোলন অবশেষে প্রত্যাহার করলো শিক্ষার্থীরা ।
গতকাল রবিবার সকাল ১২ ঘটিকার সময় দৌলতপুর উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ১১ দফা দাবি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমান মেনে নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন ।
প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন আন্দোলনের সমন্বয়ক দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোঃ আল ফাহাদ আবিদ, ভোকেশনাল দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মারুফ হোসেন, ভোকেশনাল দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী স্বাধীন মাহফুজ,সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোস্তাহিনা আক্তার, সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জুঁই ইসলাম প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে আল ফাহাদ আবিদ ১১ দফা দাবি উপস্থিত সাংবাদিকদের পড়ে শুনান - প্রথম দফা দাবি- শিক্ষার্থীদের সাথে অশালীন আচরণ করা যাবে না। শাসন করলেও তা শালীন ভাষায় করতে হবে। দ্বিতীয় দফা- অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের কোন রূপ ক্ষতি সাধন করা যাবে না। তৃতীয় দফা- বিদ্যালয়ের অনুপস্থিতির জন্য কোন জরিপানা ধরা যাবে না। বিদ্যালয় এসে পালিয়ে গেলে জরিমানা ধরা যাবে। জরিমানার টাকার ন্যায্য হিসাব সকলের কাছে প্রকাশ করতে হবে। চতুর্থ দফা- শিক্ষার্থীদের সকল অভিযোগ শোনার জন্য প্রধান শিক্ষকের কক্ষ উন্মুক্ত থাকবে। পঞ্চম দফা- শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে কোন রূপ গোপন পরিতোষিক আদায় কিংবা স্বজনপ্রীতি করা যাবে না। ষষ্ঠ দফা- মেয়েদের কমনরুম নামাজ পড়ার জন্য পরিপাটি করে তুলতে হবে ।সকল শিক্ষার্থীর আইসিটি ক্লাস করার সুব্যবস্থা করতে হবে। সপ্তম দফা- বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক কিংবা বহিরাগত কোন শিক্ষকের সাথে দুর্ব্যবহার করলে তা মেনে নেওয়া হবে না। অষ্টম দফা- স্কুল চলাকালীন সময়ে বহিরাগত কেউ কর্তৃক কোন ছাত্রীকে ইভটিজিং করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নবম দফা -আন্দোলন চলার জন্য শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে দশম (সাধারণ এবং ভোকেশনাল) শিক্ষার্থীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এজন্য দশম শ্রেণীর মূল্যায়ন পরীক্ষা নির্ধারিত তারিখ থেকে ন্যূনতম ৫ দিন পিছিয়ে আরম্ভ করতে হবে। দশম দফা- বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কোন সাইকেল রাখার জন্য গ্যারেজ এবং খাবারের জন্য ক্যান্টিন নাই তার সুব্যবস্থা করতে হবে। একাদশ দফা - প্রতিবছর স্কাউট লিডার নিয়োগের ক্ষেত্রে দক্ষ এবং যোগ্যতা সম্পন্ন সদস্যকে বেচে নিতে হবে কোন রোগ স্বজনপ্রীতি কোন ক্ষেত্রেই সহনীয় নয়।
এবিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আল-ফাহাদ আবিদ বলেছেন প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান স্যারের পদত্যাগের যে আন্দোলন আমরা আজ থেকে প্রত্যাহার করে নিলাম। স্যার আমাদের ১১ দফা দাবি মেনে নিয়েছেন এজন্য স্যারকে আমরা আজ তাকে স্কূলে এনে তার চেয়ারে সসম্মানে অধিষ্ঠিত করেছি। আশা করছি স্যারের যত ভূল ত্রুটি ছিল তা শুধরে নিবেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন- ছাত্রদের দাবি ছিল যৌক্তিক দাবি তারা ১১ দফা দাবি আদায়ের জন্য আমার কাছে লিখিত একটি কাগজ দিয়েছেন সে কাগজ আমি দেখেছি আমি তাদের সকল দাবি দেওয়া মেনে নিয়েছি। এখন থেকে যথারীতি স্কুলে ক্লাস চলবে এবং সরকারি নিয়ম অনুসারেই বিদ্যালয়টি পরিচালিত হবে। ভবিষ্যতে আর কোন ভুল না হয় সেজন্য আমি সহ আমার শিক্ষকরা খেয়াল রাখবে এবং শিক্ষার্থীদের সুবিধা অসুবিধা বিবেচনায় আনা হবে।