ছবিঃ সংগৃহীত
কুষ্টিয়ায় এবার এক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার একাধিক টিকটক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই প্রধান শিক্ষিকার একাধিক টিকটক ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ায় এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই ওই শিক্ষিকার এহেন কর্মকান্ডের তীব্র সমালোচনা করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। আলোচিত দিলারা ইয়াসমিন জোয়ার্দ্দার কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার তালবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকা। এতে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন ওই প্রধান শিক্ষক।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একাধিক ওই টিকটক ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন রোমান্টিক বাংলা গানের তালে নানান অঙ্গভঙ্গিতে নাচ করছেন ওই প্রধান শিক্ষকা। এর মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে কলকাতায় ভাইরাল হওয়া ভুবন বাদ্যকরের গাওয়া বাদাম-বাদাম গানের টিকটক ভিডিও রয়েছে। তার এ গানের একাধিক টিকটক ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ায় চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এ ঘটনায় সোস্যাল মিডিয়া জুড়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।
নারী প্রধান শিক্ষকের এমন কান্ডে হতবাক কুষ্টিয়া জেলার সচেতন মহলও।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন,ওই প্রধান শিক্ষিকার টিকটক করা একটি ভিডিও তিনিও দেখেছেন। স্কুলের এক শিক্ষার্থীই তাঁকে ভিডিওটি দেখিয়েছেন। দেখে চরম বিব্রত হয়েছি। ওই শিক্ষক বলেন উনি কান্ডজ্ঞানহীন আচরণ করেছেন। শিক্ষার্থীদের সামনে লজ্জায় কোনো কথাই বলতে পারছিনা। অন্যান্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও আমাদেরকে নিয়ে হাসাহাসি করছেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা দিলারা ইয়াসমিন জোয়ার্দ্দারের সঙ্গে সাংবাদিকরা মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার মতো অনেকেই তো টিকটক করে। তাদের টিকটক তো সামনে আসে না। তাহলে আমারটা নিয়ে এতো সমালোচনা কেনো? এমনটি বলেই তিনি কলটি কেটে দেন। এর পর থেকে তাঁর মুঠোফোনটি সুইচ অফ পাওয়া যাচ্ছে। এ ব্যাপারে তালবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আরিফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তাঁর নজরে এসেছে। এ ব্যাপারে তিনি ওই প্রধান শিক্ষিকার সাথে কথা বলেছেন। এ ব্যাপারে তিনি অনুতপ্ত। তার ভুল নিজেই স্বীকার করেছেন। এরপর এমনটি আর হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে একজন শিক্ষক হয়ে এ ধরণের টিকটক ভিডিও বানানো তাঁর উচিত হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এ ব্যাপারে সচেতন নাগরিক কমিটির কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি রফিকুল আলম টুকু বলেন,শিক্ষকতা একটি মহান পেশা। শিক্ষার্থী ও সমাজের মানুষ তাদেরকে অনুসরণ করেন। মাধ্যমিক পর্যায়ের একজন প্রধান শিক্ষকের এমন টিকটক ভিডিও বানানোকে সমাজের অবক্ষয় ছাড়া আর কিছুই বলা যাবে না।
মিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জুলফিকার হায়দার বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এ ব্যাপারে মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বলেন, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখে এ ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সূত্র জানায়, গত চার মাস হলো মিরপুর উপজেলার তালবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন দিলারা ইয়াসমিন জোয়ার্দ্দার।